মুসলিমদের বার্ষিক উৎসব দুটি – ঈদুল ফিতর এবং ঈদুল আদহা।

ঈদুল আদহার প্রধান ইবাদাত উদহিয়া বা কুরবানি। এই ঈদে আল্লাহ আযযা ওয়া জাল্লা বাহীমাতুল আন’আম বা চতুষ্পদ জন্তুদের কিছু – উট, গরু/মহিষ, ছাগল, এবং ভেড়া আমাদের কুরবানি করার জন্য অনুমতি দিয়েছেন।

একটি প্রাণ যা আল্লাহ সুবহানাহু সৃষ্টি করেছেন, তাঁর অসীম দয়ায় আমাদের অধীন করে দিয়েছিলেন এবং আমাদের সেটাকে আল্লাহর উদ্দেশ্যে জবাই করার পরেও সেটা থেকে আমাদের খাওয়ার অনুমতি দিয়েছেন। সব প্রশংসা একমাত্র আল্লাহর।

বাংলাদেশে কুরবানির ঈদকে কেন্দ্র করে পশু মোটা-তাজাকরণ চলে। পশু মোটা-তাজাকরণ দোষণীয় নয়, দোষণীয় পশুগুলোকে স্বাভাবিকভাবে খাবার খাইয়ে মোটা করার বদলে অস্বাভাবিকভাবে অল্প সময়ের মধ্যে গরুকে মোটা-তাজা করা।

দুর্ভাগ্যজনকভাবে বাংলাদেশের কিছু ব্যবসায়ী বিভিন্নভাবে এই কাজটা করে –

১. ডেক্সামেথাসন বা পাম ট্যাবলেট জাতীয় ওষুধ যা দেহ কোষে পানির পরিমাণ বাড়িয়ে পশুকে বড়, হৃষ্টপুষ্ট দেখায়।

২. স্টেরয়েড বা হরমোন ইনজেকশন যা দ্রুতবর্ধনে সাহায্য করে।

৩. গরু মোটাতাজা করার নামে সরাসরি ইউরিয়া খাওয়ানো হয়।

গরুতে দেওয়া যাবতীয় ভেজাল এড়াতে ২০১৪ সাল থেকে সরোবর লালন কুরবানির গরু বিক্রি করে আসছে। আমাদের বৈশিষ্ট্য –

১/ দেশি গরু বিক্রি করি।

২/ প্রাকৃতিক খাবার খাওয়াই।

৩/ অনলাইনে গরু দেখা এবং কেনা যায়।

৪/ গরু সরাসরি ক্রেতাদের বাসায় পৌঁছে দেওয়া হয়।

কেনার নিয়মাবলী

১। আমরা প্রতিটি গরুর – কিছু ছবি, একটি ছোট্ট ভিডিও এবং গরুর সে সময়কার লাইভ ওয়েট (live weight) (১৯ – ২২ জুনের মধ্যে নেয়া) www.shorobor.biz  ওয়েবসাইটে দিয়ে দেব। প্রতিটি গরুর জন্য থাকবে আলাদা একটি আই ডি নম্বর।

২। লাইভ ওয়েইট হচ্ছে একটা গরুকে জীবিত ওজন মেশিনে উঠিয়ে দিলে যে ভর বা ওজন পাওয়া যায়। সাধারণত একটি জীবিত গরুর ওজনের আনুমানিক ৫০% হচ্ছে রক্ত, হাঁটু থেকে পা, মাথা, চামড়া, এবং ভুড়ি। অর্থাৎ বাকি ৫০% হাড় মিশ্রিত মাংস এবং অন্যান্য অংগ – কলিজা, ফুসফুস, কিডনি ইত্যাদি হিসেবে পাওয়া যায়।

গরুভেদে এই অনুপাতে ৫% পর্যন্ত কম-বেশি হতে পারে। আমরা আশা করছি ঈদ পর্যন্ত পর্যাপ্ত খাওয়া দাওয়ার এবং নিয়মিত পরিচর্যার কারণে গরুর ওজন স্বাভাবিকভাবেই কিছুটা বাড়বে ইন শা আল্লাহ। 

৩। www.shorobor.biz  সাইটে ২৯ জুন থেকে ইনশা আল্লাহ আমাদের গরু বিক্রির জন্য তৈরী থাকবে। বিক্রি চলবে স্টক শেষ হবার আগ পর্যন্ত। ওয়েবসাইটে দেওয়া গরু থেকে ছবি, ভিডিও এবং লাইভ ওয়েইট সহ অন্যান্য তথ্য ভালোভাবে দেখে একটি গরু পছন্দ করুন। চেক আউটের সময় অনুগ্রহ করে ওয়েব সাইটে বাসায় পৌঁছে দেবার ঠিকানা বিস্তারিত লিখুন এবং সাথে একটি সচল মোবাইল নাম্বার দিন। কেউ যদি একের অধিক গরু না কেনেন সেক্ষেত্রে ওয়েবসাইটে একাধিক গরু বুকিং দেওয়া যাবে না।

৪। গরু পছন্দের পরে ওয়েবসাইটে চেক-আউট করলে গরুটি ১২ ঘন্টার জন্য উক্ত ক্রেতার জন্য নির্দিষ্ট করা থাকবে। বুকিং দেওয়ার ১২ ঘন্টার মধ্যে গরুর দামের ৫০% (অর্ধেক) পেমেন্ট করলে গরুটি ওই ক্রেতা কিনেছেন হিসেবে ধরা হবে। পেমেন্ট করা না হলে বুকিং বাতিল হয়ে যাবে এবং পুনরায় গরুটি আবারও ওয়েব সাইটে ‘স্টক ইন’ হয়ে যাবে এবং অন্যান্য ক্রেতারা সেটা কিনতে পারবেন। গরুর বাকি অর্ধেক দাম অবশ্যই ১৩ জুলাই, ২০২১ এর আগে পরিশোধ করতে হবে।

৫। দাম পরিশোধ করা যাবে ব্যাংক ট্রান্সফার/ নগদ টাকা / চেক এর মাধ্যমে। ব্যাংকের মাধ্যমে গরুর দাম পরিশোধ করলে অনলাইন ট্রান্সফার এর কপি অথবা মানি রিসিপ্ট এর স্ক্যান কপি [email protected]l.com   – ইমেইলে পাঠাতে হবে।

৬। ওয়েবসাইটে দেওয়া গরুর দামের ভেতর পিক আপ ডেলিভারি চার্জ অন্তর্ভূক্ত রয়েছে। এর জন্য অতিরিক্ত কোন খরচ গ্রাহকের কাছ থেকে নেয়া হবে না এবং এই দামের পরে অন্য কোন প্রকার কর বা সরকারি চাঁদা বা ফী নেই। গরু ক্রেতাদের বাসায় পৌঁছে যাবে জুলাইয়ের ১৯ এবং ২০ তারিখের মধ্যে, যদি ঈদ – ঊল – আদহা ২১ জুলাই হয়। ক্রেতাদের সুবিধার্থে এবার আমরা ঈদের আগের দিন এবং তার আগের দিনে সমস্ত গরু ডেলিভারি দেব ইনশা আল্লাহ।

৭। গরু বুঝে নেয়ার ক্ষেত্রে সময়ের ব্যাপারে একটু নমনীয় হওয়া বাঞ্ছনীয়। কেননা ঈদ মৌসুমে ট্রাফিক জ্যামের ব্যাপারে আমাদের হাত নেই। যে গরুটি আপনি হাতে পেয়েছেন এবং তার যে ছবি ওয়েব সাইটে দেখানো হয়েছে সেটা একই গরু হবে ইনশা আল্লাহ। অনেক সময় ছবি এবং আসল প্রাণী সামনাসামনি দেখার ক্ষেত্রে কিছুটা পার্থক্য থাকতে পারে। কিছু কিছু ক্ষেত্রে এটা ক্রেতার বাসায় পৌঁছানোর আগ পর্যন্ত যে লম্বা সময় গরুকে সফর করতে হয় (অনেক সময় প্রায় ১৮ থেকে ২৪ ঘণ্টা) সেই ধকলের কারণে। এই সময়টাতে গরুকে খাবার দেওয়া যায় না বিধায় তাকে বেশ দুর্বলও দেখা যায়। অনুরোধ রইল গরু বুঝে নেয়ার সময় এ ব্যাপারগুলোও বিবেচনায় নেয়ার।

৮। অনুগ্রহ করে কেনার পূর্বেই সকল তথ্য ও নিয়মাবলী জেনে, বুঝে পছন্দ করে নিন। আল্লাহর নামে কুরবানী করার জন্য যে পশুটি কেনা হয়েছে তার উপর সন্তুষ্ট থাকা দরকার। বিক্রিত গরু সরোবর আর ফেরত নেবে না।